কম্পিউটারের ব্যবহার এবং কি কি কাজে ব্যবহার হয়

Table of Contents

ভূমিকা:

 

মুলত মানুষ তার কাজের উন্নয়নের জন্য কম্পিউটারকে কাজে লাগায়। কম্পিউটারের ব্যবহারে

নির্ভর ও গতিশীল হয়ে পড়ে প্রতিটি কাজ। তাই প্রতিনিয়ত কম্পিউটারের ব্যবহার বেড়েই চলছে।

 

 

কম্পিউটারের ব্যবহার এবং কি কি কাজে ব্যবহার হয়:

এ সম্পর্কে এখন আলোচনা করা হলো :

 

 

কম্পিউটার (Computer) কি?

 

এমন একটি ইলেকট্রনিক গণনাকারী যন্ত্র যা তথ্য গ্রহণ করে এবং বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তা

বিশ্লেষণ এবং উপস্থাপন করে। ব্যবহারকারী কোনো ডেটা বা উপাত্ত কম্পিউটারে সরবরাহ

করলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে  কম্পিউটার কাজের ফলাফল প্রদান করে ।

কম্পিউটারের ব্যবহার এবং কি কি কাজে ব্যবহার হয়

কম্পিউটারের ব্যবহার এবং কি কি কাজে ব্যবহার হয়

 

 আরো দেখুন

 

কম্পিউটারেরও নিজস্ব কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে বিভিন্ন যন্ত্রের মতাে।

 

  • স্বয়ংক্রিয়তা(Automation)
  • যুক্তিসংগত সিদ্ধান্ত(Logical Decision)
  • বহুমুখিতা(Versatility)
  • অসীম জীবনীশক্তি(Endless Life)

 

কম্পিউটারের উল্লেখযােগ্য বৈশিষ্ট্যগুলো:

 

আরো দেখুন

 

 

নির্ভুলতা:

 

এমন একটি মেশিন যা দিয়ে মানুষের দেয়া সূত্র ও যুক্তির মাধ্যমে কম্পিউটার ফলাফল প্রদান

করে।কখনও ভুল করে না কম্পিউটার।শতকরা ১০০ ভাগ কম্পিউটারের নির্ভুলতা।

 

সূক্ষ্মতা :

 

তাই অনেক ঘর পর্যন্ত নির্ভুলভাবে গাণিতিক ক্রিয়াকলাপ করতে পারে।এ কারণে কম্পিউটারের

সূক্ষ্মতা অনেক বেশি ধরে নেয়া যায়।

 

বিশ্বাসযােগ্যতা:

 

কাজ করার জন্য কম্পিউটার মানুষের দেয়া নির্দেশ ব্যবহার করে। কম্পিউটার ভুল করে না

কিন্তু মানুষ করে, এটা প্রমাণিত।

 

ক্লান্তিহীনতা:

 

আরো দেখুন

 

একটি যন্ত্র।আর এ যন্ত্রের একটি স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য হচ্ছে ক্লান্তিহীনতা।কম্পিউটার রাত দিন

ক্লান্তিহীন,বিরক্তিহীন এবং বিশ্রামহীনভাবে কাজ করতে পারে।

 

স্মৃতিশক্তি:

 

কম্পিউটারের মেমােরিতে নির্দেশ (প্রােগ্রাম), প্রয়ােজনীয় ডেটা এবং প্রক্রিয়াজাত ফলাফল

(ইনফরমেশন) সংরক্ষিত করে রাখা যায়।

 

স্বয়ংক্রিয়তা:

 

এ কারণে ঝুঁকিপূর্ণ কাজে মানুষের পরিবর্তে কম্পিউটারকে ব্যবহার করা হয়। এছাড়া আরাে

অনেক ক্ষেত্রে যেমন, কল-কারখানায়, বিস্ফোরক গবেষণায় কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়।

 

ব্যবহারের বহুমুখিতা:

কম্পিউটার একটি প্রােগ্রামনির্ভর যন্ত্র।যখন যে প্রোগ্রাম কম্পিউটারে লােড করা থাকে সে

প্রােগ্রাম অনুসরণ করে কম্পিউটার কাজ করতে পারে।

 

অসীম জীবনসীমা:

 

গােগ্রামের কোন নির্দিষ্ট জীবনসীমা নেই কিন্তু মানুষের জীবনের যেমন একটি নির্দিষ্ট সময়

আছে।বছরের পর বছর সমান যােগ্যতায় একই মানে কাজ করে যেতে পারে মানুষের তৈরি

প্রোগ্রাম।প্রােগ্রামের কোন মানের কমতি হয় না দীর্ঘদিন কাজ করার পরও।

কম্পিউটারের ব্যবহার এবং কি কি কাজে ব্যবহার হয়000

 

আমাদের জীবনে কম্পিউটার এর ব্যবহারঃ

 

শিক্ষাক্ষেত্রে :

 

বিদ্যালয় থেকে স্কুল,কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় এর প্রয়োজনীয় সকল কাজ যেমন – অ্যাডমিট

কার্ড,মার্কশীট, বিভিন্ন পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়ন,ইন্টারনেটের মাধ্যমে (ONLINE TEST)

বিভিন্ন প্রবেশিকা পরীক্ষা এবং কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি সব কাজে কম্পিউটার ছাড়া এখন

কল্পনা করা সম্ভব নয়।

 

বিজ্ঞান গবেষণায় (Scientific Research)কম্পিউটারের ব্যবহার:

 

বিজ্ঞানের ক্ষেত্র গুরুত্বপূর্ণ রিসার্চ ও ডেটা সঞ্চয় করে রাখতে কম্পিউটার অবদান অনস্বীকার্য।

বিজ্ঞান গবেষণার কাজে যে সব কম্পিউটার ব্যবহার করা হয় সেই সকল কম্পিউটার গুলো

অনেক উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন হয়ে থাকে।

 

তথ্য ও যোগাযোগ ব্যবস্থায় কম্পিউটারের ব্যবহার:

 

অন্যদিকে  সহজ  ইন্টারনেট ,ই-মেল,ব্যবহার -এর ফলে  খুব কম সময়ের মধ্যে পৃথিবীর এক

প্রান্ত হতে অন্য প্রান্তে খুব দ্রুত তথ্য পাঠানো বা যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে যা কম্পিউটারের

সাহায্য ছাড়া কোনোভাবে সম্ভব নয়।

 

 

বিনোদন ক্ষেত্রে কম্পিউটারের ব্যবহার:

 

 

আজ প্রায় সকল মানুষ  কম্পিউটার ও ল্যাপটপ ব্যাবহার করে  নানান রকমের গান,সিনেমা,

নাটক এবং কম্পিউটার বিভিন্ন  গেমস খেলে বিনোদন উপভোগ করে থাকে। এছাড়া অধিক

ক্ষমতা সম্পর্ণ কিছু কম্পিউটারের মাধ্যমে অ্যানিমেশন ও স্পেশাল এফেক্ট-এর ব্যবহার করে

বিভিন্ন ধরণের চলচ্চিত্র নির্মাণ এবং নতুন নতুন  কম্পিউটার গেমস তৈরি করা হয়ে থাকে।

 

ব্যবসা-বাণিজ্যে  কম্পিউটারের ব্যাবহার:

 

বিজ্ঞাপন জগৎ থেকে শুরু করে আধুনিক ব্যাঙ্কিং সিস্টেমে ATM-এর ব্যবহার,সব জায়গায়

এখন কম্পিউটারের ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। এছাড়া শেয়ার বাজার,রেল ও বিমানের টিকিট

বুকিং, অ্যাকাউন্টিং সিস্টেম প্রভৃতি ক্ষেত্রে হিসাবপত্র রাখার কাজে কম্পিউটার ব্যবহৃত হচ্ছে।

 

প্রশাসনিক কাজে কম্পিউটার ব্যবহার:

 

প্রশাসনিক কাজে কম্পিউটার আজ অপরিহার্য্য। বিভিন্ন দেশ তাদের অর্থনৈতিক

পরিকাঠামোকে পর্যবেক্ষণ করতে, রাজনৈতিক ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও ক্যাবিনেট

মন্ত্রীদের মধ্যে ভিডিও কনফারেন্স করতে কম্পিউটারের সাহায্য নিতে হয়।

 

 

আবহাওয়ার পূর্বাভাস গণনা করতে কম্পিউটারের ব্যবহার:

 

 

সেই সমস্ত সুপার কম্পিউটার ব্যবহার করে ভূপৃষ্ঠ কৃত্রিম উপগ্রহগুলি নিয়ন্ত্রিত করার পাশাপাশী

স্যাটেলাইট থেকে তথ্য সংগ্রহ করে সেগুলি বিশ্লেষণ করে এবং যথেষ্ট নির্ভুলভাবে আবহাওয়ার

পূর্বাভাস সম্পর্কে জানা সম্ভব হয়।

 

খেলাধুলার ক্ষেত্রে কম্পিউটারের ব্যবহার:

 

ক্রিকেট খেলার মাঠে থার্ড আম্পায়ার কম্পিউটারের মাধ্যমে গণনা করে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে

থাকে। এছাড়া ফুটবল, ক্রিকেট ও অনান্য গেম লাইভ ব্রডকাস্ট করার জন্য অনেক কম্পিউটার

ব্যবহার করা হবে।

 

ডিজাইন ও শিল্প উৎপাদন ক্ষেত্রে কম্পিউটারের ব্যবহার:

 

বিভিন্ন ধরণের ম্যানুফ্যাক্টরিং কারখানায় যে সমস্ত পণ্য বা প্রোডাক্ট উৎপাদন করা হয় তার

নকশা বানানো হয়ে থাকে যাকে CAM বা কম্পিউটার এইডেড ম্যানুফ্যাকচারিং।

এছাড়া বর্তমানে কম্পিউটার এর সাহায্যে থ্রিডি প্রিন্টিং এর আবির্ভাব ঘটেছে যা এই পদ্ধতি শিল্প-

সামগ্রী উৎপাদন খুব কম সময়ে বেশি পরিমানে পণ্য বা প্রোডাক্ট উৎপাদন বিশেষ ভাবে সাহায্য

করে।

 

চিকিৎসার কাজে কম্পিউটার ব্যবহার

 

 

রোগ নির্ণয়ের কাজে নয়, বরং, রোগ নির্ণয় করার পর রোগের কারণ আবিস্কার এবং রোগের

ঔষধ আবিস্কার করার কাজেও কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

 

অফিসিয়াল কাজে কম্পিউটার ব্যবহার:

 

কম্পিউটার আবিস্কার হওয়ার পর থেকে অফিসিয়াল সকল কাজ কম্পিউটার দিয়ে অনেক

সহজেই সম্পাদন করা সম্ভব হচ্ছে। অফিসের সকল হিসেব সংরক্ষণ করা, বিজ্ঞাপন তৈরি এবং

প্রকাশ, কর্মীদের তালিকা এবং বেতন বণ্টন, সহ বিভিন্ন কাজে কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়ে

থাকে।

 

ব্যবসায়ের কাজে কম্পিউটার ব্যবহার:

 

ব্যবসায়ের সকল হিসেব নিকেশ, চার্ট তৈরি এবং এনালাইসিস, ব্যবসায়ের সকল ক্লায়েন্ট এর

তথ্য সংরক্ষণ, মূলধন এবং মুনাফার তথ্য সংরক্ষণ ও এনালাইসিস করার কাজে কম্পিউটার

অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে আসছে।

 

কল-কারখানার কাজে কম্পিউটার ব্যবহার:

 

এখন বিভিন্ন শিল্প কারখানায় কম্পিউটার চালিত রোবট দিয়ে অনেক কাজ করে নেয়া হয়ে

থাকে। কম্পিউটার এর এই অভূতপূর্ব উন্নয়ন মানুষের কষ্ট অনেকাংশে কমিয়ে দিচ্ছে।

 

বিনোদনের জন্য কম্পিউটার ব্যবহার:

 

কম্পিউটারে সিনেমা দেখা, গেম খেলা, ভার্চুয়াল রিয়্যালিটি উপভোগ করা, ছবি দেখা সহ আরও

অনেক কাজ করা যায়। বিনোদন এর মাধ্যম হিসেবে কম্পিউটার এর উপরে এখন আর কোনো

পন্থা নেই।

 

মহাকাশ গবেষণার কাজে কম্পিউটার ব্যবহার:

 

কম্পিউটারের মাধ্যমে রকেট আবিস্কার করা এবং সেগুলো উড্ডয়ন করার সকল কাজ

সম্পাদন করা হয়ে থাকে। অতঃপর, পৃথিবীর বাইরের স্যাটেলাইট সহ সকল রকেট এর সাথে

যোগাযোগ রক্ষা করতে কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়ে থাকে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে কম্পিউটারের

ব্যবহার দিন দিন বেড়েই চলেছে।

 

ব্যাংকিং এর কাজে কম্পিউটার ব্যবহার:

 

গ্রাহকদের জামানত এর টাকা, লোন এর তথ্য সংরক্ষণ করার কাজে পুরো বিশ্বের সকল ব্যাংক

এ কম্পিউটার ব্যবহৃত হয়ে আসছে। কম্পিউটার এর ব্যবহার এর কারণে ব্যাংকিং ব্যবস্থা এখন

পূর্বের তুলনায় অনেক দ্রুত এবং সুরক্ষিত হয়েছে।

 

টেলি কমিউনিকেশনের কাজে কম্পিউটার ব্যবহার:

 

বিশ্বের যেকোনো জায়গায় এখন কম্পিউটার এর সাহায্যে যোগাযোগ ও যেকোনো ধরণের তথ্য

আদান-প্রদান করা সম্ভব হচ্ছে।

 

সংবাদপত্র প্রকাশনার কাজে কম্পিউটার ব্যবহার:

 

সময়ের পরিক্রমায়, সবকিছু এখন কম্পিউটার এর উপর নির্ভরশীল। কম্পিউটার ব্যবহার করে

এখন সংবাদপত্র প্রকাশ করা হয়ে থাকে। সংবাদপত্র ছাপানো সহ সকল কাজ এখন দ্রুত

সম্পাদন করা সম্ভব হচ্ছে কম্পিউটারের সাহায্যে।

 

 

কম্পিউটার এর সাহায্যে কি কি কাজ করা যায়?

 

 ছবি দেখা, ভিডিও দেখা, ছবি আঁকা, বিভিন্ন তথ্য আদান প্রদান করা, মহাকাশ গবেষণা করা,

অফিসের কাজে ব্যবহার করা সহ আরও অনেক কাজ করা যায়।

 

কম্পিউটার এর প্রধান কাজ কি?

 

কম্পিউটার এর প্রধান কাজ হচ্ছে ইনপুট গ্রহণ করা এবং প্রসেসরে সেগুলো প্রসেস করে

আউটপুট হিসেবে আমাদের কাঙ্ক্ষিত তথ্য দেখানো।

শেষ কথা:

 

এখান থেকে আমরা জানতে পারলাম যে ,

মুলত মানুষ তার কাজের উন্নয়নের জন্য কম্পিউটারকে কাজে লাগায়। কম্পিউটারের ব্যবহারে

নির্ভর ও গতিশীল হয়ে পড়ে প্রতিটি কাজ। তাই প্রতিনিয়ত কম্পিউটারের ব্যবহার বেড়েই চলছে।

এমন একটি ইলেকট্রনিক গণনাকারী যন্ত্র যা তথ্য গ্রহণ করে এবং বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তা

বিশ্লেষণ এবং উপস্থাপন করে। ব্যবহারকারী কোনো ডেটা বা উপাত্ত কম্পিউটারে সরবরাহ

করলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে  কম্পিউটার কাজের ফলাফল প্রদান করে ।

 

 

1 Comment

Add a Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *