এখন আমি শবে বরাতের ফজিলত সম্পর্কে আপনাদের মাঝে আলোচনা করব যেন আপনারা এই সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নিতে পারবেন. চলুন তাহলে
এই সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।
হাদিসের আলোকে শবে বরাত
মুআজ ইবনে জাবাল (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেন, ‘আল্লাহ তাআলা অর্ধ শাবানের রাতে সৃষ্টিকুলের প্রতি রহমতের দৃষ্টি দেন এবং মুশরিক ও হিংসুক
ছাড়া সবাইকে ক্ষমা করে দেন।’ (সহিহ ইবনে হিব্বান, হাদিস: ৫৬৬৫; আল-মুজামুল আওসাত, হাদিস: ৬৭৭৬; শুআবুল ইমান, হাদিস: ৩৮৩৩; মিশকাতুল
মাসাবিহ, হাদিস: ১৩০৬) হাদিসটি হাদিসবিশারদ নির্ভরযোগ্য সব আলেমের গবেষণা মতেই ‘সহিহ’ তথা সর্বোচ্চ মাত্রায় সঠিকভাবে প্রমাণিত।শবে বরাতের ফজিলত
শবে বরাতের ফজিলত
শবে বরাতের ফজিলত হজরত আয়িশা সিদ্দিকা (রা.) বলেন, একবার রাসুলুল্লাহ (সা.) নামাজে দাঁড়ালেন এবং এত দীর্ঘ সেজদা করলেন যে আমার ধারণা হলো, তিনি মৃত্যুবরণ
করেছেন; আমি তখন উঠে তাঁর পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুলি নাড়া দিলাম, তাঁর বৃদ্ধাঙ্গুলি নড়ল; তিনি সেজদা থেকে উঠলেন এবং নামাজ শেষ করে আমাকে লক্ষ করে
বললেন, হে আয়িশা! তোমার কি এ আশঙ্কা হয়েছে? আমি উত্তরে বললাম, ইয়া রাসুলুল্লাহ (সা.)! আপনার দীর্ঘ সেজদা থেকে আমার আশঙ্কা হয়েছিল আপনি
মৃত্যুবরণ করেছেন কি না? নবীজি (সা.) বললেন, তুমি কি জানো এটা কোন রাত? আমি বললাম, আল্লাহ ও আল্লাহর রাসুলই ভালো জানেন। তখন নবীজি (সা.)
বললেন, এটা হলো অর্ধশাবানের রাত; এ রাতে আল্লাহ তাআলা তাঁর বান্দাদের প্রতি মনোযোগ দেন; ক্ষমাপ্রার্থনাকারীদের ক্ষমা করে দেন, অনুগ্রহ প্রার্থীদের
অনুগ্রহ করেন। আর বিদ্বেষ পোষণকারীদের তাদের অবস্থাতেই ছেড়ে দেন। (শুআবুল ইমান, তৃতীয় খণ্ড, পৃষ্ঠা ৩৮২)।
হজরত আয়িশা (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে, নবীজি (সা.) এ রাতে মদিনার কবরস্থান ‘জান্নাতুল বাকি’তে এসে মৃতদের জন্য দোয়া ও ইস্তিগফার করতেন। তিনি
আরও বলেন, নবীজি (সা.) তাঁকে বলেছেন, এ রাতে বনি কালবের ভেড়া বকরির পশমের (সংখ্যার পরিমাণের) চেয়েও বেশিসংখ্যক গুণাহগারকে আল্লাহ ক্ষমা
করে দেন। (তিরমিজি শরিফ, হাদিস: ৭৩৯)।শবে বরাতের ফজিলত
হাদিস শরিফে আছে, ‘হজরত মুআজ ইবনে জাবাল (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) বলেছেন, আল্লাহ তাআলা অর্ধশাবানের রাতে মাখলুকাতের দিকে
রহমতের দৃষ্টি দেন এবং মুশরিক ও বিদ্বেষ পোষণকারী ছাড়া আর সবাইকে ক্ষমা করে দেন।’ (ইবনে হিব্বান: ৫৬৬৫, ইবনে মাজাহ: ১৩৯০, রাজিন: ২০৪৮;
ইবনে খুজাইমা, কিতাবুত তাওহিদ, পৃষ্ঠা: ১৩৬, মুসনাদে আহমদ, চতুর্থ খণ্ড, পৃষ্ঠা: ১৭৬)।
হজরত আয়শা সিদ্দিকা (রা.) বলেন, একবার রাসুলুল্লাহ (সা.) নামাজে দাঁড়ালেন এবং এত দীর্ঘ সিজদা করলেন যে আমার ধারণা হলো তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন।
আমি তখন উঠে তাঁর পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুলি নাড়া দিলাম, তাঁর বৃদ্ধাঙ্গুলি নড়ল; তিনি সিজদা থেকে উঠলেন এবং নামাজ শেষ করে আমাকে লক্ষ করে বললেন, “হে
আয়শা! তোমার কি এ আশঙ্কা হয়েছে?” আমি উত্তরে বললাম, ‘ইয়া রাসুলুল্লাহ (সা.), আপনার দীর্ঘ সিজদা থেকে আমার আশঙ্কা হয়েছিল আপনি মৃত্যুবরণ
করেছেন কি না।’ নবীজি (সা.) বললেন, ‘তুমি কি জানো এটা কোন রাত?’ আমি বললাম, আল্লাহ ও আল্লাহর রাসুলই ভালো জানেন।’ তখন নবীজি (সা.) বললেন,
‘এটা হলো অর্ধ শাবানের রাত। এ রাতে আল্লাহ তাআলা তাঁর বান্দাদের প্রতি মনোযোগ দেন, ক্ষমাপ্রার্থনাকারীদের ক্ষমা করে দেন, অনুগ্রহপ্রার্থীদের অনুগ্রহ করেন। আর বিদ্বেষ পোষণকারীদের তাদের অবস্থাতেই ছেড়ে দেন।’ (শুআবুল ইমান, তৃতীয় খণ্ড, পৃষ্ঠা: ৩৮২)।
হাদিসে এই রাতের বিশেষ ফজিলত বর্ণনা করা হয়েছে। হজরত আবু সালাবা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত, যখন অর্ধ শাবানের রাত আসে, তখন
আল্লাহ তায়ালা মাখলুকাতের প্রতি রহমতের দৃষ্টিতে তাকান; মুমিনদের ক্ষমা করে দেন, কাফিরদের ফিরে আসার সুযোগ দেন এবং হিংসুকদের হিংসা পরিত্যাগ
ছাড়া ক্ষমা করেন না। (কিতাবুস সুন্নাহ, তৃতীয় খণ্পড, পৃষ্ঠা: ৩৮২)।শবে বরাতের ফজিলত
আরেক হাদিসে হজরত মুআয ইবনে জাবাল রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত, নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ তায়ালা অর্ধ
শাবানের রাতে মাখলুকাতের দিকে রহমতের দৃষ্টি দেন এবং মুশরিক ও বিদ্বেষ পোষণকারী ছাড়া আর সবাইকে ক্ষমা করে দেন। (সহিহ ইবনে হিব্বান, হাদিস, ৫৬৬৫)।
শবে বরাত রহমত ও মুক্তির এক মহিমান্বিত রাত। এই রাতে মহান আল্লাহ রহমতের দুয়ার খুলে দেন। পাপীদের উদারচিত্তে ক্ষমা করেন। আল্লাহর সঙ্গে
অংশীদারি স্থাপনকারী ও অন্তরে বিদ্বেষ পোষণকারী ছাড়া সবাইকে ক্ষমা করে দেন। আলি ইবনে আবি তালিব (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যখন
অর্ধ শাবানের রাত তোমাদের সামনে আসে, তখন তোমরা নামাজ আদায় করো এবং পরের দিনে রোজা রাখো। আল্লাহ তাআলা এ রাতে সূর্যাস্তের পর প্রথম
আসমানে অবতরণ করেন। এরপর তিনি এই বলে ডাকতে থাকেন—তোমাদের মধ্যে আছে কি কোনো ক্ষমাপ্রার্থনাকারী? আমি তাকে ক্ষমা করে দেব।
তোমাদের মধ্যে আছে কি কোনো রিজিক অন্বেষণকারী? আমি তাকে রিজিক দান করব। তোমাদের মধ্যে আছে কি কোনো বিপদগ্রস্ত? আমি তার বিপদ দূর
করে দেব। ফজর উদয় হওয়া পর্যন্ত এভাবেই চলতে থাকে।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ: ১৩৮৮)শবে বরাতের ফজিলত
আরো দেখুন:
জুমার দিনের গুরুত্ব ও ফজিলত 2024
সালাতের গুরুত্ব সম্পর্কে জেনে নিন
পবিত্র কুরআন-সুন্নাহর আলোকে সালাত বা নামাজের গুরুত্ব এ সম্পর্কে জানুন
নামাজের গুরুত্ব সম্পর্কে হাদিস
হাদিসে এই রাতের বিশেষ ফজিলত বর্ণনা করা হয়েছে। হজরত আবু সালাবা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত, যখন অর্ধ শাবানের রাত আসে, তখন
আল্লাহ তায়ালা মাখলুকাতের প্রতি রহমতের দৃষ্টিতে তাকান; মুমিনদের ক্ষমা করে দেন, কাফিরদের ফিরে আসার সুযোগ দেন এবং হিংসুকদের হিংসা পরিত্যাগ
ছাড়া ক্ষমা করেন না। (কিতাবুস সুন্নাহ, তৃতীয় খণ্পড, পৃষ্ঠা: ৩৮২)হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, এক রাতে রাসুলুল্লাহ (সা.) উঠে নামাজে দাঁড়িয়ে গেলেন, এতে
এত দীর্ঘ সময় ধরে সিজদা করলেন যে আমার ভয় হলো তিনি মারাই গেছেন কি না। এ চিন্তা করে আমি বিছানা থেকে উঠে রাসুল (সা.)-এর বৃদ্ধাঙ্গুলি নাড়া দিই,
এতে আমার বিশ্বাস হলো তিনি জীবিত আছেন। তারপর নিজ বিছানায় ফিরে এলাম। এরপর তিনি সিজদা থেকে মাথা ওঠালেন এবং নামাজ শেষ করে আমাকে
লক্ষ্য করে বললেন, হে আয়েশা! তোমার কি ধারণা হয়েছে যে নবী তোমার সঙ্গে সীমা লঙ্ঘন করেছে? আমি বলি, জি না, হে আল্লাহর রাসুল! তবে আপনার দীর্ঘ
সময় ধরে সিজদার কারণে আমার মনে হয়েছে আপনি মৃত্যুবরণ করেছেন।শবে বরাতের ফজিলত
এরপর রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, হে আয়েশা! তুমি কি জানো, আজকের এ রাতটি কোন রাত? আমি বললাম, আল্লাহ ও তাঁর রাসুল এ বিষয়ে অধিক জ্ঞাত।
রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, এ রাতটি অর্ধ শাবানের রাত। এ রাতে আল্লাহ তায়ালা নিজ বান্দাদের প্রতি বিশেষ করুণার দৃষ্টি দেন, অনুগ্রহপ্রার্থীদের দয়া
করেন। তবে হিংসুক লোকদের তার অবস্থার ওপর ছেড়ে দেন। (শুআবুল ইমান, হা. ৩৮৩৫)। যুগশ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিস ইমাম বায়হাকি (রহ.) বলেন, এটি উত্তম
মুরসাল হাদিস। (শুআবুল ইমান ৩/৩৮৩)।হজরত আবু বকর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “শা‘বান মাসের চৌদ্দ তারিখ
দিবাগত রাতে মহান আল্লাহ দুনিয়ার আসমানে অবতরণ করেন। সে রাতে তিনি মুশরিক এবং অন্য ভাইয়ের প্রতি বিদ্বেষ পোষক ব্যতীত সকলকে ক্ষমা করে
দেন।” মুসনাদে বাজজার- ৮০অন্যত্র মুয়াজ বিন জাবাল (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “শা‘বান মাসের চৌদ্দ তারিখ
দিবাগত রাতে মহান আল্লাহ সমগ্র সৃষ্টির দিকে রহমতের দৃষ্টিতে তাকান। সে রাতে তিনি মুশরিক এবং উম্মতে বিভেদ সৃষ্টিকারী ব্যতীত সকলকে ক্ষমা করে
দেন।” [সহিহ ইবনে হিব্বান- ৫৬৬৫; শুআবুল ইমান, বায়হাকি- ৩৮৩৩]শবে বরাতের ফজিলত
অন্যত্র ইবনে উমর (রা.) বলেন, “পাঁচটি রাত এমন রয়েছে, যে রাতের দোয়া ফিরিয়ে দেওয়া হয় না।— ১. জুমু‘আর রাত। ২. রজব মাসের প্রথম রাত। ৩. শা‘বান
মাসের চৌদ্দ তারিখ দিবাগত রাত (শবে বরাত)। ৪. ইদুল ফিতরের রাত। ৫. ইদুল আজহার রাত।” [মুসান্নাফে আবদুর রাজজাক- ৭৯২৭]
শেষ কথা:
এখন থেকে আমরা জানতে পারলাম যে,শবে বরাতের ফজিলত এ সম্পর্কে আমরা বিস্তারিতভাবে জানতে পেরেছি।