জম্বি একটি ফ্রেঞ্চ শব্দ যেটা জন্বি থেকে এসেছে। জম্বি একটি কল্পিত চরিত্র হলেও পুরো বিশ্বে জম্বি নিয়ে অনেক মুভি এর ভিডিও গেম আছে। জম্বি শব্দটি ১৮১৯ সালে প্রথম ব্যবহার করা হয়। জম্বি কখনো কেউ নিজের চোখে না দেখলেও এ নিয়ে কারো আকর্ষণ এর শেষ থাকে না। জম্বির ধারনা পুরোপুরি কল্পিত চরিত্র হলেও অনেক জায়গায় মানুষ এখন ও নিজের চোখে জম্বি দেখার দাবি করে থাকে। জম্বি সাধারনত এক ধরনের জীবন্ত লাশ যা এক ধরনের ভাইরাস এর সংক্রমণ এ চিন্তা বুদ্ধি ও বোধ শক্তি হারিয়ে ফেলে এবং হয়ে ওঠে মানুষখেকো। তারা কাউকে কামরালে সে মানুষটি ও জম্বির আকার ধারন করে। এটা ধারণা করা হয়ে থাকে জম্বি যদি ভাইরাস সংক্রমণ করা শুরু করে তাহলে কয়েকদিনেই মানবজাতি নিরবিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে।
জম্বির গোড়া হচ্ছে আফ্রিকার ছোট একটি দেশ হাইতি। হাইতি নামক এই দেশটিতে রোগ সংক্রমণ লেগেই থাকে তাই তারা অনেক সময় এই রোগ থেকে বাচার জন্য কালো যাদু ও করে থাকে। হাইতিতে এটি বিশ্বাস করা হতো যে “বারুন সামেডি (baron samedi) নামের তাদের দেবতা মৃত মানুষ গুলোকে কবর থেকে জীবিত করতো তাদের মৃত্যুর পরে স্বর্গীয় জীবন দেয়ার জন্য আর তখন থেকেই জম্বি ( জীবন্ত লাশ) এর ধারনার উৎপত্তি হয়। এখনও হাইতিয়ানরা বিশ্বাস করে থাকে যে তাদের দেশে জম্বির আবির্ভাব রয়েছে।
কথিত আছে এখানকার তান্ত্রিকরা কালো জাদুর সাহায্যে মৃত মানুষকে জম্বিতে পরিণত করতে পারতো। কিন্তু আসলে তারা যেটি করে তা হলো, যখন কোন অসুস্থ কেউ চিকিৎসার জন্য তান্ত্রিকদের কাছে আসতো তখন সেই ব্যক্তিকে জাদু টোনর ছলে তান্ত্রিকরা এক প্রকারের জৈবিক ওষুধ খাইয়ে দিতো। ফলে সেই ব্যক্তি তার জ্ঞানশক্তি হারিয়ে ফেলতও প্রায় জিবিত লাশ হয়ে যেত এবং কিছুদিন পর সে কোমায় চলে যায় কিন্তু হাইতি অনুন্নত দেশ হবার জন্য এখানকার মানুষ কোমায় চলে যাওয়া ব্যক্তিদের মৃত ভেবে মাটিতে পুঁতে ফেলতো। আর এই সব কিছুর সুযোগ নিয়েই তান্ত্রিকরা পরে সেই মৃত ব্যক্তির দেহটিকে কবরের ভেতর থেকে তুলে নিয়ে আসে এবং বিভিন্ন প্রকার জরিবুটি ওষুধ খাইয়ে মৃতদেহটিকে পুনরায় জীবিত করে ফেলতো। এই মানুষগুলি তাদের সব স্মৃতিশক্তি হারিয়ে ফেলার কারণে তান্ত্রিকরা, এই মানুষগুলিকে কাছে রেখে তাদের দিয়ে অনেক কাজ করিয়ে নিতো । পরবর্তীতে নারসিস নামে এক বাক্তিকে তার বোন জম্বি অবস্থায় চিনে ফেলেছিল তখন সে তার ভাইকে নিজের বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে আসে। নারসিস সুস্থ হওয়ার পর সে সেই ঘটনার কথা সবাইকে বলে এবং সে বলে কিভাবে তান্ত্রিকরা কুড়ি বছর ধরে তাকে জম্বি বানিয়ে তাদের সমস্ত কাজকর্ম করাতো। এভাবেই হেইতিতে মানুষ আজও জম্বি আছে বলে ধারনা করে থাকে।
এছাড়াও ধারনা করা হয় যে ক্যালেফোর্নিয়ার ঈগল মাউন্টেন নামে ১৯৮০ সালের দিকে খালি হয়ে যাওয়া পরিত্যক্ত মরুভুমি এলাকায় জম্বি দেখতে পাওয়া যায়, এলাকাটি ঘোস্ট (ghost) হাউস (House) নামে পরিচিত।
১৯৩০ সালে প্রথম “হোয়াইট জম্বি” নামের একটি মুভি জম্বির নিয়ে তৈরি করা হয় তার পর অনেক গল্প আর ছবি তৈরি করা হয় জম্বি নিয়ে। ১৯৬৮ সালে জর্জ এ রোমারিওর মুভি “নাইট অফ দ্যা লিভিং ডেড” এ প্রথমবার জম্বিকে আধুনিক ভাবে উপস্থাপন করা হয়।