ছবি- এনালিসা মিশেল
এলিজাবেথ মিশেল জন্ম ১৯৫২ সালের ২১ শে সেপ্টেম্বর ওয়েস্ট জার্মানিতে। নিজের ৩ বোন আর বাবা মার সাথে থাকতেন এনা।ছোট বেলা থেকে খুব ধার্মিক প্রকৃতির ছিলেন এনালিসা।
ইউনিভার্সিটিতে পড়ার সময় এনা খুব অদ্ভুত কিছু জিনিস আবিস্কার করলেন। অদ্ভুত এক রোগ বাসা বাঁধলো এনালিসার ভিতরে। ইপিলেপটিক সিজার যেটা কে বাংলায় বলা হয় মৃগিরোগ। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষ্যমতে এটি মৃগিরোগ হলেও এনা খুব খারাপ কিছু অনুভব করছিলো।এনা অনুভব করতে পারছিল তার ওপর খুব খারাপ কিছু ভর করেছে।এনা নিজের আশে পাশে অনেক কিছু দেখতে পেত এবং অনেক রকম শব্দ শুনে পাগলের মতো আচরণ করতো। তার অবস্থা দেখে তারা বাবা মা তাকে ঝাড়ফুঁক (exorcism) করার চিন্তা করলেন।ওই সময় ঝাড়ফুক করাটা খুব সহজ কিছু ছিলোনা এটার জন্য চার্চ এর অনুমতির প্রয়োজন হতো। সব কিছু দেখে জোসেফ স্টানগেল নামের এক ক্যাথলিক ধর্মযাজক সহ ২ যাজক কে এনালিসার ঝাড়ফুঁক করাকে সমর্থন দিলো । যাজক এনালিসাকে দেখেই বুঝতে পারে তার ওপর একাধিক শয়তান(ডিমোন) ভর করেছে।
১৯৭৫ সালে একটি চিঠি তে এনালিসা লিখেছিলো “আমি কিছুই না, আমার আশে পাশের সব ভুল,৷ আমি কি করবো? আমার ভালো হতে হবে। তুমি আমার জন্য দোয়া করবে। আর একজন আমাকে বলেছিল আমি অন্যর জন্য কষ্ট ভোগ করছি এটি খুব কুৎসিত”। যাজক দাবি করলো যে তার উপর হিটলার সহ আরো ৩৩ টা খারাপ আত্মা ভর করছে। তার এক্ষুনি ভালো ভাবে ঝাড়ফুক শুরু না করলে খারাপ হতে পারে। এনার গলা থেকে পুরুষ এর স্বর বেড়িয়ে আসতো যে অন্য ভাষায় কিছু বলতে চাইতো। আস্তে আস্তে এনার খাওয়া দাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। তার শরীর এর ওজন কমতে থাকে। ডাক্তার ও তেমন কোন রোগের কারণ ধরতে পারছিল না। এইভাবে নিজের জীবন এর সাথে যুদ্ধ করতে করতে ১৯৭৫ সালের ১ জুলাই দূর্বলতা আর অনাহারে মারা যায় এনালিসা।
ছবি- এনালিসা আর তার মা এনা মিশেল
তার মৃত্যুর পর পরবর্তীতে আদালত এনার মৃত্যুর কারন মৃগরোগ বলে থাকে আর তার চিকিৎসার অবহেলার করার কারনে তার মা বাবা আর ২ যাজক কে ৩ বছর এর কারাদণ্ড দেয়া হয়। তার মৃত্যুর পর রহস্যজনক ভাবে যাজক এর পক্ষে যত প্রমান ছিল সব মুছে যায় যার ফলে তাকে আদালত দোষারোপ করতে সক্ষম হয়। ১৯৮০ সালে প্রথমবার এসব কাহিনি বর্ণনা করে ফেলিসিটাস গডম্যান বই লেখে যার নাম ” দ্যা এক্সরিসম অফ এমিলি রোজ”। এইসব কাহিনির ওপর ২০০৫ সালে নির্মিত হয় ছবি “দ্যা এক্সরিজম অফ এমিলি রোজ”। যারা হরর মুভি ভালোবাসেন দেখে ফেলতে পারেন আধ্যাত্মিক শক্তি আর যুক্তির সংমিশ্রণ এ বানানো অস্থির প্রেক্ষাপট এর এই মুভিটি। আপনাদের মতামত কি এনার মৃত্যু কি আসলেই মৃগ রোগ এর ফলে হয়েছিল?